বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

কিশোর গ্যাং : সমাজের অন্ধকার ছায়া

বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থায় এক বিপজ্জনক রূপ নিচ্ছে কিশোর গ্যাং নামক অপরাধপ্রবণ চক্র। দেশের শহর ও মফস্বলাঞ্চলে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে এই গ্যাং কালচারের বিস্তার। এসব গ্যাংয়ের সদস্যরা মূলত স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কিশোর-কিশোরী, যারা বিপথগামী হয়ে পড়ছে মাদক, অস্ত্র, সহিংসতা এবং আধিপত্য বিস্তারের অপরাধে। তাদের অপরাধ কর্মকাণ্ডে রয়েছে খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি এমনকি নারী নিপীড়নের ঘটনাও। এ এক সামাজিক অবক্ষয়ের চরম বহিঃপ্রকাশ।

একটি রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে তার তরুণ প্রজন্মের উপর। অথচ আমাদের দেশের একাংশ কিশোর আজ হুমকি হয়ে উঠছে সমাজের জন্য। গ্যাং সংস্কৃতির পেছনে রয়েছে পারিবারিক অবহেলা, শিক্ষার অভাব, সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার। অপরদিকে, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি এই অপরাধকে উৎসাহিত করছে।

সমাধানের জন্য প্রয়োজন ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন এবং রাষ্ট্রের কার্যকর হস্তক্ষেপ। প্রথমত, পরিবারে শিশুদের প্রতি যত্নশীল দৃষ্টিভঙ্গি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নৈতিক শিক্ষার জোর, এবং কমিউনিটি পর্যায়ে সাংস্কৃতিক ও খেলাধুলার সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোরভাবে সক্রিয় হতে হবে, যেন এসব গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া যায়। তৃতীয়ত, কিশোর অপরাধীদের সংশোধনের জন্য আলাদা পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তোলা জরুরি।

আমরা যদি এখনই উদ্যোগ না নিই, তবে একদিন এই কিশোর গ্যাং কালচারের বিস্তার সমাজ ও রাষ্ট্রকে দুর্বিষহ অন্ধকারে ঠেলে দেবে। তাই সমাজের প্রতিটি স্তরে এখনই সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে—কিশোর গ্যাং নয়, চাই সুশিক্ষিত ও মানবিক তরুণ প্রজন্ম।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন