শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

হাসিনা আমলের ১০ ভারত চুক্তি বাতিলের দাবি আসিফ মাহমুদের, পররাষ্ট্র উপদেষ্টার নীরবতা

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত ১০টি চুক্তি ও প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে, আর কয়েকটি প্রকল্প পুনর্বিবেচনার আওতায় রয়েছে। তবে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন

রবিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে আসিফ মাহমুদ এই দাবি করেন। তাঁর ভাষ্যমতে, বাতিল হওয়া প্রকল্পগুলো মূলত বাংলাদেশের সার্বভৌম স্বার্থ ও অর্থনৈতিক ভারসাম্যের পরিপন্থী ছিল।

পোস্টে তিনি লেখেন, “বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক পর্যালোচনার অংশ হিসেবে হাসিনা সরকারের আমলে হওয়া ১০টি চুক্তি ও প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। বাকি কয়েকটি বিষয়ে পুনর্বিবেচনা চলছে।”

সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে সাংবাদিকেরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সংক্ষিপ্তভাবে বলেন,

“এ নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।”

বাতিল ও পুনর্বিবেচনাধীন চুক্তির তালিকা

আসিফ মাহমুদের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, যেসব চুক্তি ও প্রকল্প বাতিল বা পুনর্বিবেচনার পর্যায়ে রয়েছে, সেগুলো হলো—

বাতিল চুক্তি ও প্রকল্প:

১. ত্রিপুরা–চট্টগ্রাম রেল সংযোগ প্রকল্প

২. অভয়পুর–আখাউড়া রেলপথ সম্প্রসারণ

৩. আশুগঞ্জ–আগরতলা করিডোর

৪. ফেনী নদী পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প

৫. বন্দরের ব্যবহার সংক্রান্ত সড়ক ও নৌপথ উন্নয়ন চুক্তি

৬. ফারাক্কাবাদ সংক্রান্ত প্রকল্পে বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতা প্রস্তাব

৭. সিলেট–শিলচর সংযোগ প্রকল্প

৮. পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন সম্প্রসারণ চুক্তি

৯. ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল (মিরসরাই ও মোংলা)

১০. ভারতীয় প্রতিরক্ষা কোম্পানি জিআরএসই-এর সঙ্গে ট্যাগ বোট চুক্তি

পুনর্বিবেচনাধীন ও আলোচনাধীন চুক্তি:

• আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তি

• গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তি (নবায়ন/পুনর্বিবেচনা পর্যায়ে)

• তিস্তা নদী পানি বণ্টন চুক্তি (খসড়া পর্যায়ে আলোচনায়)

• কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন প্রকল্প (স্থগিত অবস্থায়)

পর্যবেক্ষণ ও প্রতিক্রিয়া

সরকারি সূত্রে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা না এলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যেকোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি বাতিল বা স্থগিতের আগে যথাযথ কূটনৈতিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। ফলে আসিফ মাহমুদের পোস্টটি “নীতি পর্যায়ের প্রস্তাবনা” হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের নতুন ভারসাম্য খুঁজে দেখা হচ্ছে, এবং এসব সিদ্ধান্ত সেই প্রক্রিয়ারই অংশ হতে পারে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন