শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ঢাকায় বেলারুশের দূতাবাস খোলার অনুরোধ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

বাংলাদেশের সঙ্গে বেলারুশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে ঢাকায় পূর্ণাঙ্গ দূতাবাস স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।

আজ বুধবার (৯ জুলাই) বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত বেলারুশের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত Mikhail Kasko-র সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ অনুরোধ জানান উপদেষ্টা।

উপদেষ্টা বলেন, “১৯৯২ সালে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ও বেলারুশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। দুই দেশের মধ্যে কৃষি, প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ বেলারুশ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সার আমদানি করে। এসব কারণে সাধারণ মানুষের পর্যায়ে যোগাযোগও বেড়েছে। অথচ ঢাকায় বেলারুশের দূতাবাস না থাকার কারণে ভিসা ও কনস্যুলার সেবায় দীর্ঘসূত্রিতা, খরচ বৃদ্ধি এবং জনদুর্ভোগ দেখা দিচ্ছে।”

তিনি জানান, বর্তমানে ঢাকায় বেলারুশের একটি অনারারি কনস্যুলেট থাকলেও মূল দূতাবাসটি নয়াদিল্লিতে অবস্থিত। “ঢাকায় পূর্ণাঙ্গ দূতাবাস খুললে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হবে এবং জনগণ উপকৃত হবে,” বলেন উপদেষ্টা।

বেলারুশের রাষ্ট্রদূত Mikhail Kasko বলেন, “ঢাকায় দূতাবাস খোলা অসম্ভব নয়, তবে এজন্য দুই দেশের সরকারের কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২০২১ সালের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ বেলারুশ থেকে সর্বাধিক মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার আমদানি করত। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে বেলারুশ থেকে সার আমদানির অর্থ পরিশোধে জটিলতা তৈরি হয় এবং বর্তমানে বাংলাদেশ বেলারুশ থেকে সার আমদানি বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ সব দেশের কাছ থেকে নেওয়া সার ক্রয়ের অর্থ পরিশোধ করেছে। বেলারুশের বকেয়া অর্থও উপযুক্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুত পরিশোধ করা হবে।” এ লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানকে বেলারুশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে ব্যবস্থা নিতে তাৎক্ষণিক টেলিফোন নির্দেশ দেন।

বৈঠকে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের কারাগারে থাকা এক বেলারুশ নাগরিককে বন্দি বিনিময়ের আওতায় ফেরত নেওয়ার অনুরোধ জানান। জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ওই বেলারুশ নাগরিক হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত এবং মামলাটি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি বিনিময় সংক্রান্ত কোনো চুক্তি নেই। অপরাধী যেই হোক, অপরাধ অপরাধই। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।”

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা, অবৈধ অভিবাসন, মানবপাচার প্রতিরোধ, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং ঢাকায় বেলারুশের দূতাবাস খোলাসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

এ সময় ঢাকাস্থ বেলারুশের অনারারি কনসাল অনিরুদ্ধ কে. রায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান, যুগ্মসচিব (রাজনৈতিক-১) মো. জসীম উদ্দিন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রদূত সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টাকে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য বেলারুশের জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন