শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদ ও তাঁর পরিবারের সাড়ে ৪ কোটি শেয়ার অবরুদ্ধ করলো সিআইডি

ঢাকা (১৯ নভেম্বর ২০২৫):
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, তাঁর ভাই ইউসিবি ব্যাংক পিএলসি’র সাবেক পরিচালক আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি এবং রনির স্ত্রী ও মেঘনা ব্যাংক পিএলসি’র সাবেক পরিচালক ইমরানা জামান চৌধুরীর নামে থাকা মেঘনা ব্যাংকের প্রায় সাড়ে চার কোটি শেয়ার অবরুদ্ধ করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অবৈধ অর্থ দিয়ে শেয়ার ক্রয়ের প্রমাণ পাওয়ার পর আদালতের নির্দেশে এই জব্দাদেশ কার্যকর করা হয়।

সিআইডির অনুসন্ধান অনুযায়ী, অভিযুক্তদের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন ব্যক্তিগত হিসাব এবং তাদের কাগুজে প্রতিষ্ঠান Steadfast Management Trading Limited-এর নামে মোট ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৩০ হাজার ২০০ শেয়ার ক্রয় করা হয়। ক্রয়ের সময় এগুলোর বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৫৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। পরবর্তীতে স্টক ডিভিডেন্ড যুক্ত হওয়ায় শেয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৪ কোটি ৬৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৫৫টি

সিআইডি জানায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, জালিয়াতি, সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং অবৈধ অর্থ উপার্জনের অভিযোগ রয়েছে। এই অর্থের একটি অংশ বিভিন্ন চ্যানেলে বিদেশে পাচার করা হয় এবং পরবর্তীতে পুনরায় দেশে এনে বৈধতার রূপ দিতে চেষ্টা করা হয়।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২২ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিঙ্গাপুর ও দুবাই থেকে মোট ২ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৪৪৪ মার্কিন ডলার দেশে আনা হয়। চক্রের সদস্য আবুল কাসেম এই টাকা ইউসিবি ব্যাংক ও এনআরবিআইসি ব্যাংকের এফসি অ্যাকাউন্টে জমা করেন। এরপর ইমরানা জামান চৌধুরী ও Steadfast Management Trading Limited-এর নামে ৬০ কোটি টাকানগদ ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা করা হয়।

এই অর্থ পরে কমিউনিটি ব্যাংকের একটি বিশেষ অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয় এবং সেখান থেকে ৫৯.৯৫ কোটি টাকা ব্যয় করে মেঘনা ব্যাংকের শেয়ার ক্রয় করা হয়।

অনুসন্ধানে আরও উঠে আসে, Steadfast Management Trading Limited-এর কাগুজে মালিকানার আড়ালে যাদের পরিচালক দেখানো হয়েছে—উৎপল পাল (ম্যানেজিং ডিরেক্টর) এবং নাসিম উদ্দিন মোহাম্মদ আদিল (ডিরেক্টর)—তারা প্রকৃতপক্ষে জাবেদের মালিকানাধীন আরামিট গ্রুপের কর্মচারী এবং দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী।

সিআইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৮ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত এই শেয়ার সম্পদ জব্দের নির্দেশ দেন।

ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট মামলাটি তদন্ত করছে। সিআইডি জানায়, অবৈধ অর্থের উৎস, লেনদেনের পূর্ণ চক্র, বিদেশে সংশ্লিষ্টতা এবং চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সনাক্তকরণসহ তদন্ত কার্যক্রম এখনও চলমান।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন