বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

নতুন টেলিকম নীতিমালায় হতাশ আইওএফ

ব্যবসায়িক অস্তিত্ব রক্ষায় আন্তর্জাতিক এসএমএস সেবায় আইজিডাব্লিউদের প্রবেশাধিকার দাবি

নতুন টেলিকম নীতিমালা উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে অপারেটরস ফোরাম (আইওএফ)। সংগঠনটি দাবি করেছে, এ নীতিমালার ফলে দেশীয় বিনিয়োগকারীদের ব্যবসা আরও সংকটে পড়বে এবং বিদেশি কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণ বেড়ে যাবে।

আইওএফের প্রেসিডেন্ট আসিফ সিরাজ রব্বানী অভিযোগ করেন, এই নীতিমালা গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের আপত্তি উপেক্ষা করেই অনুমোদন করা হয়েছে। তাঁর মতে, দীর্ঘদিন ধরে বিদেশি মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের (এমএনও) হাতে আন্তর্জাতিক এসএমএস ব্যবসা তুলে দেওয়ার কারণে দেশীয় আইজিডাব্লিউরা ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এর ফলে সরকারও প্রতিবছর অন্তত ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।

তিনি জানান, শুধু আইজিডাব্লিউ খাতেই প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে এবং বহু দক্ষ প্রযুক্তিবিদ এ খাতে কর্মরত। এ পর্যন্ত তারা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব দিয়েছে। অথচ নীতিনির্ধারণে তাদের মতামত প্রায় উপেক্ষিত হচ্ছে।

রব্বানী আরও বলেন, আইজিডাব্লিউরা আন্তর্জাতিক ভয়েস কলের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক এসএমএস ব্যবসায় প্রবেশাধিকার পাবেন ধরে নিয়েই বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু অনুমোদন না মেলায় বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বর্তমানে বৈধ পথে কলের পরিমাণ ১০ কোটি থেকে নেমে ১ কোটি ২০ লাখে দাঁড়িয়েছে। এতে ব্যবসার অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়েছে।

আইওএফের দাবি, অবিলম্বে আইজিডাব্লিউদের আন্তর্জাতিক এসএমএস ব্যবসার অনুমতি দেওয়া হলে শুধু তাদের ব্যবসায়িক টিকে থাকাই সম্ভব হবে না, সরকারেরও উল্লেখযোগ্য রাজস্ব বাড়বে।

বিদেশি অ্যাগ্রিগেটরদের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি মাসে বাংলাদেশে ৩ কোটির বেশি আন্তর্জাতিক ইনকামিং এটুপি এসএমএস প্রবেশ করছে। প্রতিটি এসএমএসের গড় বাজারদর ৮ সেন্ট হিসেবে এ খাত থেকে মাসিক আয় দাঁড়ায় প্রায় ২৪ লাখ ডলার। কিন্তু বর্তমানে মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে বিটিআরসি সর্বোচ্চ ১ লাখ ৫৬ হাজার ডলার পায়।

আইওএফের হিসাব মতে, লাইসেন্সিং গাইডলাইন মেনে এই সেবা আইজিডাব্লিউর মাধ্যমে পরিচালিত হলে কেবল তাদের থেকেই বিটিআরসি পেত ৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার। আইসিএক্স এবং অপারেটরদের রাজস্ব ভাগাভাগি যোগ করলে মাসিক আয় দাঁড়াত কমপক্ষে ১২ লাখ ৫ হাজার ডলার, যা বর্তমান আয়ের চেয়ে প্রায় আট গুণ বেশি।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন