বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

রাশিয়ার তেল কেনায় ভারতের রপ্তানিতে মার্কিন ৫০ শতাংশ শুল্ক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর নতুন করে বড় ধরনের অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করেছে। রাশিয়ার কাছ থেকে ছাড়ে অপরিশোধিত তেল কেনার জেরে ভারতীয় পণ্যে শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে ওয়াশিংটন। বুধবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বলছে, রাশিয়ার তেল কেনার মাধ্যমে ভারত পরোক্ষভাবে ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থ জোগাচ্ছে। তাই এই শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

ভারত সরকারের হিসাব অনুযায়ী, নতুন শুল্কের ফলে প্রায় ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি ঝুঁকির মুখে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার; শুধু ২০২৪ সালেই দেশটিতে ভারতের রপ্তানি হয়েছিল ৮৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ভারত অভিযোগ করেছে, এ সিদ্ধান্ত “অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য”।

মার্কিন প্রশাসন জানায়, কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাত যেমন ওষুধশিল্প ও ইলেকট্রনিকস আপাতত ছাড় পেয়েছে। তবে এসব খাতেও নতুন তদন্ত শুরু হয়েছে, যা ভবিষ্যতে অতিরিক্ত শুল্কে রূপ নিতে পারে।

নতুন শুল্কে ভারতের শ্রমঘন শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই) জানায়, টেক্সটাইল, রত্ন ও গয়না, চামড়াজাত পণ্য এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাত ভয়াবহ চাপে পড়বে। সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব মন্তব্য করেন, “এটি ভারতের জন্য কৌশলগত ধাক্কা, যা যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিনের বাজার হারানোর ঝুঁকি তৈরি করেছে।”

এদিকে, মার্কিন চাপের মুখে নতি স্বীকার না করার আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গুজরাটে এক সমাবেশে তিনি বলেন, “আমার কাছে কৃষক, ছোট ব্যবসায়ী এবং দুগ্ধখাতের স্বার্থই সর্বাগ্রে। আমার সরকার কোনো অবস্থাতেই তাদের ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেবে না।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন শুল্ক নীতি ভারতের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা দেবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বাণিজ্য সম্পর্ককে অনিশ্চিত করে তুলবে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন