বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এক দিনে কমপক্ষে ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজা, ২২ আগস্ট :

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় শুক্রবার ভোর থেকে অন্তত ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে। এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৬ জন। সেখানে সম্ভাব্য বৃহত্তর স্থল অভিযানের আগে হামলা আরও জোরদার করেছে ইসরায়েল।

গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান এলাকায় একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া মানুষের ওপর চালানো বিমান হামলায় অন্তত ১২ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, স্কুল প্রাঙ্গণে তাঁবু টানিয়ে অনেকে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ইসরায়েলি কোয়াডকপ্টার ভবনের ওপরে ঘোরাফেরা করছে, পরে বিস্ফোরণ ঘটলে ধোঁয়া উড়তে থাকে।

শহরের তুফ্ফাহ এলাকায় আরেকটি হামলায় একজন নিহত হন। এ ছাড়া খান ইউনিসের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজায় এক নারী ও চার শিশু ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন। উত্তর গাজার জাবালিয়া আল-বালাদ অঞ্চলে হামলায়ও একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এদিকে গাজার সর্ববৃহৎ শহর গাজা সিটি ধ্বংস করার হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেছেন, হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত না মানলে “নরকের দরজা খুলে যাবে তাদের মাথার ওপর।” শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে— সব বন্দির মুক্তি এবং হামাসের সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ। তবে হামাস জানিয়েছে, যুদ্ধ বন্ধ হলে তারা বন্দিদের মুক্তি দিতে প্রস্তুত, কিন্তু স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের নিশ্চয়তা ছাড়া নিরস্ত্রীকরণের কোনো প্রশ্নই ওঠে না।

গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় হওয়া নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে আলোচনার নির্দেশ দেন। যদিও একইসঙ্গে তিনি গাজা সিটি দখলের জন্য বড় ধরনের সামরিক অভিযানের অনুমোদন দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন। অনেক ইসরায়েলি নাগরিক আশঙ্কা করছেন, এ ধরনের অভিযান জীবিত প্রায় ২০ বন্দিকে আরও ঝুঁকির মুখে ফেলবে।

আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজযোম জানান, “গাজায় আরেকটি রাত কেটে গেছে মৃত্যুর মিছিল নিয়ে, আর ভোর হলো অসহনীয় দুঃখে আচ্ছন্ন হয়ে। ফিলিস্তিনিদের কাছে বার্তাটা স্পষ্ট— গাজার কোনো কোণই ইসরায়েলি হামলা থেকে নিরাপদ নয়।”

চিকিৎসা সূত্র জানায়, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন ছিলেন সাহায্যের সন্ধানে যাওয়া মানুষ। মধ্য গাজার নেজারিম করিডোরের কাছে গুলি চালিয়ে একজন সাহায্যপ্রার্থীকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনারা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, গত ২৭ মে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF) নতুন ত্রাণ বণ্টন প্রক্রিয়া চালুর পর থেকে অন্তত ২ হাজার ৩৬ জন সাহায্যপ্রার্থী নিহত হয়েছেন।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন