বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

ট্রাম্প–জেলেনস্কি বৈঠক ও ইউরোপীয় নেতাদের অবস্থান: শান্তি সমঝোতায় নতুন অধ্যায়?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত বৈঠক ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধের ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি নিয়ে নতুন আলোচনা তৈরি করেছে। বৈঠকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, শান্তি সমঝোতার শর্ত এবং রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য নতুন আলোচনার দিকনির্দেশ উঠে এসেছে।

ইউরোপীয় নেতাদের উদ্বেগ

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার ট্রাম্পকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, শান্তি প্রক্রিয়া শুধুমাত্র কূটনৈতিক সমঝোতায় সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না, বরং ইউক্রেনকে কার্যকর সামরিক সহায়তা এবং নিরাপত্তা নিশ্চয়তার মধ্য দিয়েই স্থিতিশীল সমাধান সম্ভব। তারা রাশিয়ার আগ্রাসন প্রতিরোধে ইউরোপীয় ঐক্যের ওপর জোর দেন।

ট্রাম্পের প্রস্তাব ও অবস্থান

ট্রাম্প বৈঠকে উল্লেখ করেন, ইউক্রেন যদি ন্যাটো সদস্যপদ থেকে সরে আসে এবং ক্রিমিয়ার দাবি ছেড়ে দেয়, তবে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ দ্রুত সমাপ্ত হতে পারে। যদিও ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নেতারা এ শর্তকে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করেছেন। তবুও ট্রাম্প নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন, যদিও তিনি বিস্তারিত সামরিক সহায়তা বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ঘোষণা দেননি।

জেলেনস্কির জবাব

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি কোনো ধরনের ভূমি ছাড় বা রাজনৈতিক ছাড় দেওয়ার বিষয়ে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, “রাশিয়াই এই যুদ্ধ শুরু করেছে, তাদেরই তা শেষ করতে হবে।” পাশাপাশি তিনি ক্রিমিয়া ও ওডেসার উদাহরণ টেনে বলেন, ইউক্রেনের জনগণ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কখনোই পিছু হটবে না। তবে তিনি হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান।

পুতিনের সঙ্গে সম্ভাব্য বৈঠক

বৈঠকের পর ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করে জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন। সূত্রগুলো বলছে, অদূর ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের সম্ভাবনা আছে। এতে ইউরোপীয় নেতারা সতর্ক আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

বৈঠকের তাৎপর্য

বিশ্লেষকদের মতে, ফেব্রুয়ারির বৈঠকের তুলনায় এবারের আলোচনা অনেক বেশি ইতিবাচক এবং বাস্তবসম্মত। ইউরোপীয় নেতারা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন— শান্তির পথে অগ্রসর হতে হলে ইউক্রেনকে কার্যকরভাবে সমর্থন করতে হবে। অপরদিকে ট্রাম্প শান্তি আলোচনার সূচনা করতে আগ্রহী হলেও তার প্রস্তাবকে ইউক্রেন অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে। ফলে সামনে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক টানাপোড়েন আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন