শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

নারীর নিরাপত্তায় কুইক রেসপন্স টিম গঠন, সমাজের পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতা বড় বাধা: উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

ঢাকা, ৩ জুলাই ২০২৫

সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, “বাংলাদেশে বিরাজমান পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার ফলে নারীদের প্রতি যে বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠেছে, তা আজ সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীর নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।”

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাজধানীর বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এসময় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এনডিসি উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, “সমাজে আমাদের শিশুরা নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতিত হচ্ছে, তারা আশ্রয়হীন, নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছে। এমনকি মাদ্রাসায় পড়া ছেলে শিশুরাও যৌন সহিংসতার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। নৈতিকতার অবক্ষয় এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের ক্রমহ্রাসের কারণে নারীরা পুরুষদের হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বেশি।”

তিনি জানান, মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট কোনো কাঠামো পাননি। তাই দ্রুত একটি কাঠামো গঠনের উদ্যোগ নেন তিনি। ইতোমধ্যে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং জাতীয় পর্যায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

“নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের মাধ্যমে নানা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে,” উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কুইক রেসপন্স টিম এবং কুইক রেসপন্স টাস্কফোর্স গঠন করা হচ্ছে, যা তৃণমূল পর্যায়ে কার্যকরভাবে কাজ করবে। ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে এই কুইক রেসপন্স টিম কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশা করছি।”

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা থেকে এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন বলে জানান উপদেষ্টা শারমীন। তিনি বলেন, “দেশের সকল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কুইক রেসপন্স টিমের কার্যক্রমের গতি বাড়ানো হবে।”

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইন থাকলেও এ ধরনের অপরাধের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। পরিবার, কর্মক্ষেত্র, পাবলিক স্পেস এমনকি অনলাইনেও নারীরা নানাভাবে সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইনের ১৪ ধারা এবং হাইকোর্টের নির্দেশনা সত্ত্বেও অনেক সময় মিডিয়ায় ভিকটিমের ছবি প্রকাশ করা হয়, যা আইনবিরোধী। বরং অপরাধীর ছবি এবং পরিচয় প্রকাশ করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “নারী ও শিশুদের নিজেদের প্রতি হওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবাইকে একসঙ্গে আওয়াজ তুলতে হবে। সাংবাদিকদের ভূমিকা এই ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনাদের সহযোগিতা আমি কামনা করি।”

সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন