শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনায় তেলের বাজার অস্থির, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ধাক্কার আশঙ্কা

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল সরাসরি সংঘাতের জেরে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে গেছে প্রায় ৯ শতাংশ। ইসরায়েল কর্তৃক ইরানের প্রধান তেল ও গ্যাস স্থাপনায় আক্রমণের পর থেকে বাজারে এক ধরণের অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ইরানের দক্ষিণে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’ এবং রাজধানী তেহরানে অবস্থিত প্রধান জ্বালানি ডিপোতে আগুন লাগার ঘটনায় তেল সরবরাহে বড় ধরনের বিঘ্নের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, যুদ্ধ যদি দীর্ঘায়িত হয় এবং ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়—তবে তা বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে দিতে পারে। উল্লেখ্য, বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ তেল পরিবাহিত হয় এই প্রণালী দিয়ে। ফলে কেবল মধ্যপ্রাচ্য নয়, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ার অনেক দেশ জ্বালানি সংকটে পড়তে পারে।

তেলের দামে এই আকস্মিক উত্থানের প্রভাব ইতোমধ্যে পড়তে শুরু করেছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। তেল নির্ভর পণ্যের দাম যেমন পরিবহন, শিল্পজাত পণ্য, কৃষি উপকরণ—সবকিছুর উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদের হার বাড়াতে বাধ্য হবে এবং বিনিয়োগ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। এতে করে মুদ্রার মান কমে যেতে পারে, শেয়ারবাজারে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়বে।

বাংলাদেশের মতো আমদানিনির্ভর দেশগুলোর জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল। বাড়তি দামে তেল আমদানির ফলে রিজার্ভে চাপ বাড়বে, জ্বালানির উপর ভর্তুকি ব্যয় বেড়ে যাবে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে। একইসঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বেড়ে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, অবিলম্বে কূটনৈতিক সমঝোতায় না গেলে শুধু যুদ্ধ নয়, বৈশ্বিক অর্থনীতিও নতুন এক সংকটের দিকে ধাবিত হতে পারে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন