শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশ–দক্ষিণ কোরিয়া সমঝোতা: কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ স্কিম জোরদার হবে

জেনেভা | ৪ জুন ২০২৫

বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের জন্য টেকসই ও কার্যকর ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থা চালু করতে বাংলাদেশ সরকার এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সমাজকল্যাণ সংস্থা K-COMWEL (Korea Workers’ Compensation & Welfare Service) এর মধ্যে একটি সমঝোতা পত্র (Letter of Intent) স্বাক্ষরিত হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (ILO) সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই সমঝোতা স্বাক্ষর হয়। বাংলাদেশের পক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান সমঝোতা পত্রে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ILO-এর সহকারী মহাপরিচালক মিয়া সেপ্পো।

যৌথভাবে বাস্তবায়ন হবে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা

চুক্তি অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়ার অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্স (ODA) ও বাংলাদেশের যৌথ অংশীদারিত্বে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের জন্য পুনর্বাসন পরিষেবা, পেশাগত রোগ কভারেজ এবং প্রশাসনিক কাঠামোর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি বিশদ সমীক্ষা চালানো হবে। একইসাথে সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারক, প্রশাসনিক ইউনিট ও স্টেকহোল্ডারদের প্রশিক্ষণ এবং কারিগরি সহায়তা দেওয়া হবে। এতে শ্রমিক ও মালিক পক্ষের মতামতকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে।

ILO ও GIZ এর পাইলট প্রকল্পের ভিত্তি

এই উদ্যোগটি বাস্তবায়নে সহায়তা করছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO), জার্মান উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা GIZ এবং বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল দক্ষিণ কোরিয়ার K-COMWEL পরিদর্শনে গেলে ODA-ভিত্তিক সহযোগিতার পথ সুগম হয়। এ প্রকল্প ILO-এর ২০১৫ সাল থেকে পরিচালিত গবেষণা ও চলমান পাইলট প্রকল্পের অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে পরিকল্পিত।

ILO কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী প্রতিশ্রুতি

উভয় দেশ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কনভেনশন ১২১ (১৯৬৪)—যা কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত—এর আলোকে শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যদিও এই সমঝোতা আইনি বাধ্যবাধকতা তৈরি করে না, এটি ভবিষ্যতের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা ও একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় EIS (Employment Injury Scheme) বাস্তবায়নের ভিত্তি স্থাপন করবে।

শ্রমিকদের জন্য টেকসই সুরক্ষা কাঠামোর আশা

এই সহযোগিতার ফলে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো একটি আন্তর্জাতিকমানের ও টেকসই কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনা ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে শ্রমিকদের জন্য একটি ন্যায্য, কার্যকর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক সুরক্ষা কাঠামো প্রতিষ্ঠিত হবে, যা ভবিষ্যতে শিল্প ও শ্রমবান্ধব পরিবেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন