বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫

চেঙ্গিস খানের ইতিহাস: এক মহান সামরিক শাসকের উত্থান ও প্রভাব

চেঙ্গিস খান, যাঁর আসল নাম ছিল তেমুজিন, ১১৬২ সালের দিকে মঙ্গোলিয়ার এক যাযাবর গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশব ছিল দারিদ্র্য ও সংগ্রামে ভরা। পিতার মৃত্যুর পর পরিবারের উপর নানা প্রতিকূলতা নেমে আসে, কিন্তু অদম্য সাহস, দৃঢ় মনোবল ও নেতৃত্বগুণে তিনি নিজ জাতির মধ্যে প্রভাব বিস্তার করেন।

তেমুজিন গোত্রে গোত্রে ঘুরে নিজের প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন এবং ১২০৬ সালে তাকে মোঙ্গলদের ‘চেঙ্গিস খান’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়, যার অর্থ “সার্বভৌম শাসক”। এই সময় থেকেই মোঙ্গল সাম্রাজ্যের যাত্রা শুরু হয়। তাঁর নেতৃত্বে মোঙ্গল বাহিনী দুর্বার হয়ে ওঠে—চীন, মধ্য এশিয়া, পারস্য, এমনকি ইউরোপের অংশবিশেষ পর্যন্ত তাঁর সেনারা পদার্পণ করে। এই সাম্রাজ্য স্থলভাগে ইতিহাসের বৃহত্তম সাম্রাজ্যে পরিণত হয়।

চেঙ্গিস খান শুধু একজন কৌশলী যোদ্ধাই ছিলেন না, বরং দক্ষ প্রশাসকও ছিলেন। তিনি ‘ইয়াসা’ নামে একটি কঠোর আইন ব্যবস্থা প্রণয়ন করেন যা গোটা সাম্রাজ্যে কার্যকর ছিল। ধর্মীয় স্বাধীনতা, যোগ্যতা অনুযায়ী পদবিন্যাস, বাণিজ্য রক্ষা এবং ডাকব্যবস্থার উন্নয়নে তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। তিনি শত্রুর প্রতি কঠোর, কিন্তু অধীনস্থদের প্রতি দয়ালু ছিলেন।

১২২৭ সালে চেঙ্গিস খানের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর তাঁর সাম্রাজ্য চার ভাগে বিভক্ত হয়ে ছেলেদের মধ্যে বণ্টিত হয়। তার উত্তরসূরিরা আরও কয়েক দশক ধরে সাম্রাজ্যের বিস্তার অব্যাহত রাখে। ইতিহাসে চেঙ্গিস খান একদিকে যেমন ধ্বংসযজ্ঞ ও ত্রাসের প্রতীক, তেমনি আধুনিক সাম্রাজ্য ব্যবস্থার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকারী এক মহান শাসক হিসেবে চিহ্নিত।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন