শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

নতুন শপথে দুর্নীতি না করার অঙ্গীকার

আগের রূপে ফেরানো হলো শিক্ষার্থীদের প্রাত্যহিক শপথ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিদিনের সমাবেশে পাঠযোগ্য শপথবাক্য নতুনভাবে নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে আগের রাজনৈতিক রেফারেন্স বাদ দিয়ে দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে দৃঢ় অঙ্গীকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বুধবার (২১ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, “সাম্যের বাংলাদেশ” প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম ও নৈতিকতার চর্চা বাড়াতে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত শপথ পাঠ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

নতুন শপথে বলা হয়েছে—

“আমি শপথ করিতেছি যে, মানুষের সেবায় সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখিবো। দেশের প্রতি অনুগত থাকিবো। দেশের একতা ও সংহতি বজায় রাখিবার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকিবো। অন্যায় ও দুর্নীতি করিবো না এবং অন্যায় ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিবো না।

হে মহান আল্লাহ/মহান সৃষ্টিকর্তা, আমাকে শক্তি দিন, আমি যেন বাংলাদেশের সেবা করিতে পারি এবং বাংলাদেশকে একটি আদর্শ, বৈষম্যহীন ও শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসাবে গড়িয়া তুলিতে পারি। আ-মী-ন।”

এ শপথে উল্লেখযোগ্যভাবে ‘অন্যায় ও দুর্নীতি করিবো না’ এবং ‘অন্যায় ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিবো না’—এই দুটি নতুন বাক্য সংযুক্ত হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, শপথ পাঠে ঐক্যবদ্ধ ও নৈতিকভাবে সুদৃঢ় প্রজন্ম গঠনের প্রত্যয় রয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনস্বার্থে প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), এবং জেলা শিক্ষা অফিসগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর শপথবাক্য পরিবর্তন করে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদদের স্মরণে একটি রাজনৈতিক রঙিন শপথ চালু হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল—

“জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তি সংগ্রামের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে… শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না।”

পরবর্তীতে, ২০২৪ সালের গণআন্দোলনের প্রেক্ষিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর পুরনো (নব্বই দশকের) শপথ পুনরায় চালু করে।

তবে এবার সেই পুরোনো শপথবাক্য নতুন মাত্রা পেয়ে দুর্নীতিবিরোধী বার্তা অন্তর্ভুক্ত করল। শিক্ষা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতিবাচক মূল্যবোধ গড়ে তুলতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন